শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন

আপডেট
বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিক্ষার্থীরা

বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিক্ষার্থীরা

মাহমুদ হাচান, শিশু সাংবাদিক: ২০২৩ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক তিন শ্রেণির শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হলেও সরকার পতনের পর আবারও ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা মূল্যায়নের জন্য নতুন নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।মাধ্যমিক পর্যায়ের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তিন ঘণ্টার বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে। এতে প্রতি বিষয়ের মূল্যয়ন কার্যক্রমের মধ্যে শিখন কালীন মূল্যয়ন ৩০ শতাংশ ও লিখিত ৭০ শতাংশ। এছাড়াও বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক জিপিএ বা গ্রেড পয়েন্ট নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসরণ কথাও নির্দেশনায় বলা হয়েছে।তবে নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী প্রণায়নকৃত বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস অনেকটা চাপ সৃষ্টি করছে, বলছে শিক্ষার্থীরা।

সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরশি মনি বলে – আমাদের বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস অনেক বড়। যা আমাদের পক্ষে দুই মাসে শেষ করা সম্ভব না। কারণ আমরা বছরের শুরু থেকে কোন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিনি। এছাড়াও সম্প্রতি সময়ের বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ক্লাস করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এর মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আমরা সিলেবাস সংক্ষিপ্ত চাই।ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী রাকিফুল ওয়াদুদ মাহিয়ান বলে – বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন গেলো, এরপর বন্যা গেলো এর মধ্যে আমরা পড়াশুনা থেকে অনেক দূরে ছিলাম। যার ফলে আমরা পড়ায় মনোযোগ দিয়ে করতে পারি নাই। হঠাৎ করে বছরের শেষে শিল্প সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা , জীবন-জাবিকা সহ বিভিন্ন ব‌ইয়ের এত বড় সিলেবাস;এত কম সময়ে পড়া আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে।ডোমার বালিকা নিকেতন স্কুলে শিক্ষার্থী লামিয়া আক্তার মিম বলে – শ্রেণিতে শিখনকালীন মূল্যয়নের জন্য পোস্টার , প্রতিবেদন বিভিন্ন কিছু করতে হচ্ছে।এতে অনেক সময় যাচ্ছে। এছাড়াও আগে শিল্প সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব‌ইয়ের বড় পরিসরে পরীক্ষা হতো না। এখন ১০০ মার্কের পরীক্ষা দিয়েছে। এমনি সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না, তার উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকা এবং মনোযোগ সহকারে পড়লেই সিলেবাস শেষ করা সম্ভব বলে মনে করছে,ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ আসাদুজ্জামান।তিনি বলেন – আমরা নতুন নির্দেশনার আলোকেই আগে থেকেই শ্রেণি কার্যক্রম করে আসছি। কিন্তু আগে পরীক্ষার মানবন্টন নিয়ে অস্পষ্টতা ছিলো। তাই নতুন সিলেবাস শেষ করা চাপ মনে করছে শিক্ষার্থীরা। তবে চাপ মনে না করে, মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে এখন শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে। আমরাও চেষ্টা করছি ২ মাসের মধ্যে সিলেবাস শেষ করতে।মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তনে হ‌ওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে বলে, মনে করেন ডোমার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জগোবন্ধু রায়।তিনি আরো বলেন – নতুন কারিকুলামের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষার্থীরা এতদিন প্রস্তুতি নিয়েছে । হঠাৎ করে মূল্যয়ন পদ্ধতি পরিবর্তনে হ‌ওয়ার কারণে তাদের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এখন আমরা নতুন নির্দেশনার আলোকে শ্রেণিতে পাঠদান করাচ্ছি। এছাড়াও কোনো কারণে নতুন আলোকে সিলেবাস শেষ করতে না পারলে, যতটুক শ্রেণিতে পড়ানো হয়েছে সেটুকুর উপর বার্ষিক পরীক্ষা প্রশ্ন করার নির্দেশনা দিয়েছে । তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো সিলেবাস শেষ করানোর।

অভিভাবক মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন – বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বন্যার কারণে শিক্ষার্থীরা পড়াশুনায় ভালো ভাবে মনোযোগ দিতে পারেনি। এখন হঠাৎ মূল্যয়ন পদ্ধতি পরিবর্তন করার জন্য শিক্ষার্থীরা হিমশিম অবস্থায় পড়ে গেছে। কিন্তু নতুন কারিকুলাম বাতিল শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুখবর। এদিকে সময় স্বল্পতার কারণে নতুন সিলেবাস শিক্ষার্থীদের পাহাড় পরিমাণ চাপ সৃষ্টি করছে। সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশিত করার সুযোগ দেওয়া।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |